একটি মজার গল্প: গোপালের উপস্থিত বুদ্ধি
গোপাল ভাঁড় বাংলার এক কিংবদন্তি চরিত্র, যিনি তার তীক্ষ্ণ বুদ্ধি, হাস্যরস, এবং উপস্থিত বুদ্ধির জন্য পরিচিত। তিনি ছিলেন নদিয়ার মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের রাজ দরবারের ভাঁড় বা রাজ জোকার। গোপালের গল্পগুলো শুধু বিনোদনমূলক নয়, সেগুলো থেকে শিক্ষণীয় অনেক কিছু পাওয়া যায়।
একটি মজার গল্প: গোপালের উপস্থিত বুদ্ধি
শিরোনাম: গোপালের চোর ধরার কৌশল
একদিন মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র গোপালকে ডেকে বললেন,
“গোপাল, রাজ্যের গ্রামে গ্রামে চুরি বেড়ে গেছে। তুমি কি কোনো উপায় বের করতে পারো?”
গোপাল একটু হাসি দিয়ে বলল,
“হুজুর, আমি উপায় বের করে ফেলেছি। আপনার অনুমতি হলে কাজ শুরু করি।”
রাজা অনুমতি দিলেন। গোপাল গ্রামের মন্দিরের সামনে একটি বড় কলস রাখলেন। তার উপরে লেখা, “এই কলসে হাত দিলে তার হাত কালো হয়ে যাবে। চোরকে ধরার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা।”
গ্রামের সবাই জানত গোপাল খুব চালাক। যে-ই চুরি করেছে, সে ভয়ে ভয়ে থাকল। গোপাল আসলে সেই কলসে কোনো বিশেষ রং ব্যবহার করেননি। তবে যেই চোর ছিল, সে ভয়ে কলসের গায়ে হাত রাখেনি, কারণ সে ভেবেছিল সত্যিই হাত কালো হয়ে যাবে।
গোপাল সবার হাত পরীক্ষা করলেন। একমাত্র চোরের হাতই ছিল একদম পরিষ্কার। এভাবে চোর ধরা পড়ল!
মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র গোপালের বুদ্ধির প্রশংসা করে তাকে পুরস্কৃত করলেন।
গোপাল ভাঁড়ের গল্পের শিক্ষণীয় দিক:
- উপস্থিত বুদ্ধি ও রসবোধ যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে পারে।
- মজার মধ্যেও বুদ্ধির প্রয়োগের গুরুত্ব রয়েছে।
- ভয় বা অপরাধবোধ চোরের মতো অপরাধীদের ধরা সহজ করে।
গোপালের এমন আরও অনেক গল্প বাংলার গ্রামীণ সমাজে লোককথা হিসেবে প্রচলিত। তারা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের চতুরতা ও সতর্কতার পাঠ দেয়। 😊
0 Comments