. গোপালের জাদুর বাঁশি
একদিন রাজা গোপালকে জিজ্ঞেস করলেন,
“গোপাল, শুনেছি তোমার কাছে একটি জাদুর বাঁশি আছে যা বাজালেই মানুষ নাচতে শুরু করে। সেটা কি সত্যি?”
গোপাল একটু হাসি চেপে বললেন,
“মহারাজ, সত্যিই আছে। তবে বাঁশি বাজানোর জন্য পরিবেশও সঠিক হওয়া দরকার। তা না হলে জাদু কাজ করবে না।”
রাজা জিজ্ঞেস করলেন, “কীভাবে প্রমাণ করবে?”
গোপাল রাজাকে বললেন, “আগামীকাল আমি এই বাঁশি নিয়ে আসব এবং প্রমাণ দেখাব।”
পরের দিন রাজসভায় গোপাল বাঁশি নিয়ে এলেন। তিনি বাঁশি বাজাতে শুরু করলেন। কিন্তু কেউ নাচল না। রাজা হেসে বললেন,
“গোপাল, এটা তো কোনো জাদুর বাঁশি নয়। কেউ নাচছেই না।”
গোপাল মুচকি হেসে বললেন,
“মহারাজ, একটু ধৈর্য ধরুন। রাজকোষাগারে যে কড়িগুলো রয়েছে, তাদের সামনে নিয়ে আসুন। বাঁশির জাদু কড়িগুলোর ওপর কাজ করে।”
রাজা রাজকোষাগারের কড়ি নিয়ে আসতে বললেন। গোপাল বাঁশি বাজালেন, এবং রাজা দেখতে পেলেন যে সভার সবাই কড়িগুলোর দিকে দৌড়ে গেল।
গোপাল বললেন,
“দেখুন, মহারাজ। বাঁশির জাদু এখানেই—টাকা আর সম্পদ যেখানে, মানুষ সেখানেই নাচে।”
২. চোরের বিচার
একবার রাজ্যের এক ধনী ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে গয়না চুরি হয়। চোরকে ধরতে রাজা গোপালকে নির্দেশ দিলেন। গোপাল সবাইকে ডেকে বললেন,
“চোরকে ধরা সহজ। আমি একটি জাদুর লাঠি এনেছি। এই লাঠি চোরের কাছে গেলে নিজে থেকেই এক ইঞ্চি বড় হয়ে যাবে।”
সবাই লাঠি ধরতে শুরু করল। পরের দিন গোপাল লাঠিগুলো মেপে দেখলেন, একটির দৈর্ঘ্য ছোট। তিনি বললেন,
“এই লাঠির মালিকই চোর। চোর ভয় পেয়ে নিজেই লাঠি ছোট করে ফেলেছে।”
চোর ধরা পড়ল, আর রাজা গোপালের বুদ্ধির প্রশংসা করলেন।
৩. গোপালের জ্বরের ওষুধ
একবার গোপাল ভাঁড় হঠাৎ খুব কাঁপতে শুরু করলেন। রাজা তাকে দেখে বললেন,
“কী হলো, গোপাল?”
গোপাল কাঁপতে কাঁপতে বললেন,
“মহারাজ, আমি জ্বরে কাঁপছি।”
রাজা বললেন,
“তোমাকে ওষুধ দেব। ঠিক হয়ে যাবে।”
গোপাল বলল,
“ওষুধের দরকার নেই, মহারাজ। আমি যদি কিছু সোনার মোহর পাই, তাহলে এই জ্বর এক মুহূর্তেই চলে যাবে।”
রাজা অবাক হয়ে বললেন,
“সোনা পেলে কীভাবে জ্বর সেরে যাবে?”
গোপাল মুচকি হেসে বললেন,
“মহারাজ, সোনা দেখলে আমার আনন্দ হবে, আর আনন্দে জ্বর দূর হয়ে যাবে!”
এই গল্পগুলো গোপাল ভাঁড়ের বুদ্ধি ও মজার চরিত্রকে দারুণভাবে ফুটিয়ে তোলে।
0 Comments